আপনি কী জানেন প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে কত রকম রোগ থেকে আমরা বাঁচতে পারি। আমরা এই পৃষ্ঠায় প্রতিদিন আপেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলচনা করব।

আপেল খাওয়ার উপকারিতা

আপেলের উপকারিতা

আপনি কী জানেন প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে কত রকম রোগ থেকে আমরা বাঁচতে পারি। আমেরিকায়  ২০০৪ সালে ১০০-টির বেশি খাদ্যের ওপর গবেষণা করে হয়। গবেষণাটি করা হয় সাধারনত কোন খাদ্যে কী পরিমান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে তা জানতে। 

গবেষণা শেষে দেখা গেল যে লাল আপেল ১২ তম এবং সবুজ আপেল ১৩ তম স্থানে রয়েছে। আমরা এই পৃষ্ঠায় আপেলের উপকারিতা সম্পর্কে আলচনা করব।

আপেলের পুষ্টিগুন

আপেলকে ঘন-পুষ্টিকর ফল হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমান আমেরিকানদের খাদ্যতালিকার নির্দেশিকায় 2,000-ক্যালোরি খাদ্যের জন্য প্রতিদিন 2 কাপ ফল খাওয়ার সুপারিশ করে, যা আপেলের মতো পুরো ফলের উপর জোর দেয়।

একটি মাঝারি 200-গ্রাম ওজনের আপেলের পুষ্টিগুন নিচে আলোচনা করা হলো: 

ক্যালোরি: 104

কার্বোহাইড্রেট: 28 গ্রাম

ফাইবার: 5 গ্রাম

ভিটামিন সি: 10%(DV)

কপার: DV এর 6%

পটাসিয়াম: DV এর 5%

ভিটামিন কে: ডিভির 4%

একই পরিবেশন ভিটামিন E, B1 এবং B6 এর জন্য DV এর 2-5% প্রদান করে।

এখনে ভিটামিন ই একটি চর্বি-দ্রবণীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে, ভিটামিন বি 1 - যা থায়ামিন নামে পরিচিত – এটি দেহের বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য প্রয়োজন, এবং ভিটামিন বি 6 প্রোটিন বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয়।

কলার পুষ্টিগুণ জানতে ক্লিক করুন

ওজন কমাতে সাহায়তা করে থাকে

আপেল খাওয়ার উপকারিতা আমরা বলে শেষ করতে পারব না। আমাদের শরীরের মধ্যে যত টুকু ওজন থাকা দরকার তার চেয়ে বেশি ওজন রয়েছে অনেকেরই। আর এই মানুষগুলো বেশি ওজনের কারনে ডায়াবেটিস, হাড়ের রোগসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এই রোগগুলো থেকে বাচতে হলো তাদের শরীরের ওজন কমাতে হবে। 

আর শরীরের ওজন কমানোর একটি প্রকৃতিক মাধ্যম হলো আপেল খা্ওয়া। কারন আপেলের মধ্যে প্রচুর পরিমানে ফাইবার ও পানি থাকে। ফলে আপনার অধীক সময় ক্ষুধা লাগবেনা। আর অতিরিক্ত ক্যালরি জাতীয় খাদ্য খাওয়া থেকে বেচে যাচ্ছেন। আর এইভাবেই আপনার ওজন নিয়ন্তনে চলে আসবে।

লিভার সুস্থ রাখতে সহায়ক

আমরা প্রতিদিন যা খাই, তার মধ্যে কিছু ক্ষতিকর পদার্থ থাকতে পারে। আর এই সকল ক্ষতিকর পদার্থ আমাদের লিভারে নানা ধরনের ক্ষতি করতে পারে। আর এই সকল ক্ষতির হাত থেকে বাচতে আমাদের প্রতিদিন আপেল খেতে হবে। কারণ আপেলের পুষ্টিগুন খুব সহজে লিভারে জমে থাকা ক্ষতিকর পদার্থ বের করতে সাহা্য্য করে।

ব্রেনকে সুরক্ষিত রাখে

আপেল নিয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণা করেছেন। আপেল রস করে খাওয়ার চেয়ে চিবিয়ে খেলে অনেক উপাকার পাওয়া যায়। এক পরীক্ষায় জানা গিয়েছে যে আপেলের জুস ব্রেনের ক্ষতিকর রিঅ্যাক্টিভ অক্সিজেন স্পেসিস এর মাত্রা কমায়ে ফেলে। 

আবার অ্যালঝাইমার রোগের উৎস হলো ব্রেন। আর এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য আপেল খাওয়া খুব উপকারি। অন্য আরেকটি গবেষণায় জানা গিয়েছে যে আপেল স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে  

বর্তমান এই মহামারির সময় সকলের প্রয়োজন যে সকল খাদ্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সেই সকল খাদ্য খাওয়ার। আর আপেলের উপকারিতা খুব সহজেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। করণ আপেলে প্রচুর পরিমানে এন্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। যা আপনার শরীরকে বিভিন্ন প্রকার রোগ হাতে মুক্ত রাখে।

কোলেস্টেরল কমাতে আপেল এর উপকারিতা

আপেলের ফল ও খোসা উভয়তেই কোলেস্টরল কমানোর উপাদান রয়েছে। অনেক বৈজ্ঞনিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে নানা রকমের হার্টের রোগ দূর করতে পারে আপেলে থাকা  ফ্ল্যাভোনয়েড। 

মহিলাদের জন্য এটি বেশি কার্যকরী। হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে আপেলের ভূমিকা কিন্তু কম নয়। আপেলে থাকা ফ্লাভানয়েড প্রায় ২০% স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। কোলেস্টেরল কমাতে আপেল এর উপকারিতা অপরিসীম।

আনার খাওয়ার উপকারিতা জানতে ক্লিক করুন

ক্যান্সার রোধ করতে সহায়ক

ক্যান্সারের মতো রোগ প্রায় রোধ করা যায় আপেল খাওয়ার মাধ্যমে। বিশেষ করে ব্রেস্ট ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার, পেটের ক্যান্সার, কোলোরেটল ক্যান্সার ইত্যাদি। তাছারা প্রচুর পরিমানে এন্টি অক্সিডেন্ট আপেলের মধ্যে পাওয়া যায়।

আর এই এন্টি অক্সিডেন্ট সব রেডিক্যাল দূর করে যা শরীরের কোষগুলিকে নষ্ট করে দেয় এবং ডি এন এ নতুন করে তৈরি করতে সাহায্য করে। ফলে টিউমারের সংখ্যাও সহজেই দূর করা যায়।

ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়: 

যারা প্রতিদিন আপেল খায়, তাদের ডায়াবেটিস না হওয়ার সম্ভাবনা ২৮% কমে যায়। কারণ আপেলে থাকা ফাইবার আমাদের রক্তের শর্করার পরিমান ঠিক রাখতে সাহায়তা করে।

দাঁতের রঙ উজ্জ্বল করতে আপেল:

আপেলের রস দাঁতের জন্য খুব উপকারি। আমরা যখন আপেল চিবিয়ে খাই তখন আপেলের রসের মাধ্যমে  আমাদের দাঁতের কোণায় থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলো দাঁত থেকে বের হয়ে আসে। 

ফলে আমাদের দাঁত নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বেচে যায়। তার মনে এই নয় যে শুধু আপেল খেয়ে দাঁতের যত্ন নিবেন। আপনাকে প্রতিদিন ২ বার পেষ্ট ও ব্রাশ দিয়ে দাঁতের যত্ন নিতে হবে।

পিত্তথলির পাথর সারাতে সহায়তা করে

আপেল খাওয়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে পিত্তথলির পাথর সারানো অন্যতম। পিত্তথলির মধ্যে অধিক পরিমানে  কোলেস্টেরল জমে গেলে পিত্তথলির মধ্যে পাথর তৈরি হয়। 

পিত্তথলির পাথর দূর করার জন্য ডাক্তাররা ফাইবার জাতীয় খাদ্য খেতে বলেন। আর এই ফাইবার আপেলের মধ্যে প্রচুর পরিমানে থাকে। ফলে আপেল খাওয়ার মাধ্যমে পিত্তথলির পাথর দূর হয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য  এবং ডায়রিয়া  দূর করে

যদি টয়লেটে গিয়ে অনেকক্ষন বসে থাকার পরও আপনার পায়খানা ক্লিয়ার না হয়। অথবা আপনাকে ঘন ঘন টয়লেটে যেতে হয় অথবা কোন কিছু খা্ওয়ার পর পরই টয়লেটে যেতে হয়। তাহলে উভয় সমস্যার একটাই ওষুধ। 

ওষধটি হলো আপনাকে প্রতিদিন আপেল খেতে হবে। কারন আপেল প্রয়োজন অনুযায়ী বর্জ্য থেকে অতিরিক্ত  জল টেনে রাখতে পারে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, আর অতিরিক্ত টয়লেটে যেতে হয় না।

আর জানতে পড়ুন:







Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন